স্বদেশ ডেস্ক:
র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৩৩ ধাপ এগিয়ে আফগানিস্তান। কিন্তু কাতারের কাছে তাদের ০-৬ গোলের হারই বলে দিয়েছিল তেমন শক্তিশালী দল নয় যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি। মঙ্গলবার তাজিকিস্তানের দুশানবের সেন্ট্রাল রিপাবলিকান স্টেডিয়ামের টার্ফের মাঠেও আফগানদের কোনো ভীতিকর মনে হয়নি। এরপরও বাংলাদেশ তাদের কাছে ০-১ গোলে হেরে যায়।
তবে তা নিছকই দুর্ভাগ্যজনকভাবে। ২৬ মিনিটে তাদের অধিনায়ক ফারসাদ নূরের হেড বাংলাদেশ গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা বাম দিয়ে হাওয়ায় শরীর ভাসিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করেন। বল তার হাতে লেগে প্রতিহত হয় ক্রস বারে। কপালটা লালসবুজদের এতোই মন্দ যে সেই বল ফের সাইড পোস্টে আঘাত হেনে গোল লাইন অতিক্রম করে। ফলে হার দিয়ে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব শুরু করলো বাংলাদেশ। আর প্রথম ম্যাচে হারের পর জয়ে ফিরলো আফগানিস্তান। অন্য দিকে আফগানদের বিপক্ষে ৪০ বছর পরে এসেও জয়ের দেখা পেল না বাংলাদেশ। ১৯৭৯ সালে তাদের বিপক্ষে ঢাকায় এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ৪-১ এ জিতেছিল লাল-সবুজরা। দুই দলের সাত ম্যাচে এখন দুই ম্যাচ জিতে এগিয়ে গেল আফগানিস্তান। এর আগে তারা ২০১৫ কেরালা সাফে ৪-০ তে জিতেছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ১০ অক্টোবর কাতারের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে।
২০১৫ সাফের সেই ফলাফলের আলোকে আজকের এই রেজাল্ট অবশ্যই ভালো জেমি ডে বাহিনীর। তবে স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবন ৯৩ মিনিটে অবিশ্বাস্য মিস না করলে ড্র নিয়েই দেশে ফেরা হতো বাংলাদেশের। ছোট বক্সের ভেতরে বল পেয়েও তড়িৎ সেই বলে শট না নিয়ে বল নিয়ন্ত্রনে নিতে যান তিনি। এতে বল তার নাগালের বাইরে চলে যায়। অবশ্য বলের সাথে তার পায়ের সংস্পর্শ হওয়ার সময় এক আফগান ডিফেন্ডার তাকে পা দিয়ে আঘাত করেন। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন জীবন। বাংলাদেশের অন্য ফুটবলাররা এতে পেনাল্টির দাবি করলেও চীনা রেফারি ফাউল দেননি। আবার অভিনয়ের জন্য জীবন হলুদ কার্ড দেখাননি। ডান দিক থেকে আসা আক্রমন থেকে সতীর্থের ব্যাকহিলে বলটি পেয়েছিলেন জীবন। তবে ভার ( ভিডিও অ্যাসিসটেন্স রেফারি) থাকলে হয়তো পেনাল্টি পেয়ে যেত বাংলাদেশ।
‘ই’ গ্রুপের এই অ্যাওয়ে ম্যাচে বাংলাদেশ প্রথম থেকে কাউন্টার অ্যাটাকে খেলতে গিয়ে ভুলটি করে। এতে চেপে ধরে আফগানিস্তান। তাদের গোলটিও ফ্রি-কিক থেকে। মাঠ রেখার একটু সামনে পাওয়া ফ্রি-কিকে হেড করেন এক আফগান। তাতে বক্সের ভেতর থেেেক নেয়া ফারসাদের হেডে পিছিয়ে পড়েন জামাল ভুঁইয়ারা। এর পর বাংলাদেশ আক্রমণে উঠে এলে আফগানরা আর তেমন সুবিধা পায়নি। এতে স্পষ্ট বাংলাদেশ প্রথম থেকে চড়াও হয়ে খেললে হয়তো এমন হতো না রেজাল্ট।
তবে জীবনের ওই মিসটি ছিল পরিকল্পিত আক্রমনের ফসল। এর বাইরে বাংলাদেশ মাঠ বড় করে দৃষ্টি নন্দন খেলা উপহার দিলেও তৈরী করতে পারেনি আর কোনো গোলের সুযোগ। ম্যাচ শেষে প্রতিপক্ষের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন বাংলাদেশের ফুটবলারেরা। ইনজুরি টাইমে জামাল ভ’ইয়াও তর্কে জড়ান আফগানদের সাথে।
বাংলাদেশ দল : রানা, বাদশা, ইয়াসিন, বিশ্বনাথ, রহমত, বিপলু ( রবিউল ৫৬ মি.), সাদ উদ্দিন, ইব্রাহিম ( সুফিল ৭৪ মি.), জীবন , সোহেল রানা, জামাল ভুঁইয়া।